Wednesday 29 December 2010

মাদ্রাসার পাঠক্রম পরিবর্তনে সক্রিয় যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য



জাহেদ চৌধুরী

সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের অংশ হিসেবে বাংলাদেশের মাদ্রাসা শিক্ষার পাঠক্রম পরিবর্তনে একত্রে কাজ করছে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র। ‘সামষ্টিক সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের’ অংশ হিসেবে মাদ্রাসা পাঠক্রমকে প্রভাবিত করতে চায় দেশ দুটি।
উইকিলিকসের ফাঁস করা যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তারবার্তার ভিত্তিতে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান প্রকাশিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মাদ্রাসার পাঠক্রম পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একত্রে কাজ করছে যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিভাগ (ডিএফআইডি)। এক তারবার্তায় যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসবিরোধী কৌশলের বিষয়টি উল্লেখ করেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি। বাংলাদেশে প্রায় ৬৪ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ হাজার কওমী মাদ্রাসার বিষয়টি উল্লেখ করতে গিয়ে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে এগুলোকে অনিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা বলা হয়েছে।
এদিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে ইউরোপসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর তোপের মুখে থাকা র্যাবকে যুক্তরাজ্য সরকারের উদ্যোগেই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে বলে তথ্য প্রকাশ করেছে উইকিলিকস। যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী দৈনিক ‘গার্ডিয়ান’ তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদের শিরোনাম করেছে, “বাংলাদেশী ‘ডেথস্কোয়াড’ ট্রেইনড বাই ইউকে গভর্নমেন্ট।” সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের কথা
চালাচালিতে লন্ডন সরকারের র্যাবকে প্রশিক্ষণ দেয়ার বিষয়টি প্রকাশ্য হয়। অন্য একটি তারবার্তায় মরিয়ার্টি বলেন, যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ পুলিশের বিশেষ বিভাগ ন্যাশনাল পুলিশিং ইমপ্রুভমেন্ট এজেন্সির (এনপিআইএ) কর্মকর্তারা ১৮ মাস ধরে র্যাবকে প্রশিক্ষণ দেয়। অনুসন্ধান ও জিজ্ঞাসাবাদের কৌশল সম্পর্কে তাদের প্রশিক্ষন দেয়া হয়।
এছাড়া ফুলবাড়ী কয়লাখনিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিয়েছিল বলে উইকিলিকসের ফাঁস করা গোপন নথিতে বলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘ভারত-ঘনিষ্ঠতা’ প্রচার বিষয়ে সতর্ক ভারত—উইকিলিকসের ফাঁস করা বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অপর এক তারবার্তায় একথা বলা হয়েছে।
একটি তারবার্তায় দেখা যায়, মানবাধিকার ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে র্যাবকে প্রশিক্ষণ দিতে রাজি হয়নি ওয়াশিংটন। তারা মনে করে, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে র্যাব মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। ফলে তাদের এ বাহিনীকে অন্য কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের আইন লঙ্ঘন করবে।
র্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার সোয়ায়েল গত রাতে আমার দেশ-এর কাছে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় র্যাবের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমরা জড়িত নই। এ ব্যাপারে বিবিসির কাছে দেয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, যে কোনো ধরনের অপারেশনই আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় করে থাকি। আমাদের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রমাণিত হলে সে ক্ষেত্রে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। আমার দেশকে তিনি জানিয়েছেন, উইকিলিকসের তথ্য ও গার্ডিয়ানের রিপোর্ট তিনি দেখেছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে র্যাবের প্রশিক্ষণের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বাইরের দেশ থেকে প্রশিক্ষণ নেয়া নতুন কোনো বিষয় নয়। বিদেশে প্রশিক্ষণে মানবাধিকার রক্ষা করে দায়িত্ব পালন ও ক্রাইম সিন সংক্রান্ত বিষয় তাদের প্রশিক্ষণে অন্তর্ভুক্ত ছিল বলে তিনি জানান। উইকিলিকসের ফাঁস করা নথি, গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন, বিবিসি, বিডিনিউজ ও আমার দেশ-এর অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে।
অনিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা নিয়ে সচেতন সরকার : শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর মাদ্রাসা শিক্ষার সিলেবাস পরিবর্তন নিয়ে কথা ওঠে। শিক্ষানীতিতে এর প্রতিফলন ঘটানোর উদ্যোগ নিলে এর প্রতিবাদে কওমী মাদ্রাসার শিক্ষকরা আন্দোলনেরও নামেন। একপর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে কওমী মাদ্রাসার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে তখনকার তার সরকারি বাসভবন যমুনায় বৈঠকও করেন। শিক্ষানীতি নিয়ে ওলামা-মাশায়েখদের মধ্যে এখনও ক্ষোভ রয়েছে। বর্তমান সরকারের ইসলাম ধর্মবিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ওলামা-মাশায়েখরা এখনও সমালোচনায় মুখর। এ নিয়ে আগামী ২৬ ডিসেম্বর তারা দেশব্যাপী হরতালও ডেকেছেন। হরতাল ঠেকানোর জন্য সরকার আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে উকিলিকসের তথ্যের ভিত্তিতে গার্ডিয়ানের রিপোর্ট ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়। ঢাকায় কওমী মাদ্রসা বোর্ড বেফাকের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি আমার দেশকে জানিয়েছেন, তাদের বোর্ডের অধীনে প্রায় ১৬ হাজার মাদ্রাসা রয়েছে। এবং এর বাইরে অন্য একটি বোর্ডের অধীন আরও প্রায় দেড় হাজার মাদ্রাসা আছে। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় ১৫ হাজার অনিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসা নিয়ে সচেতন বর্তমান সরকার। এসব মাদ্রাসায় অন্যগুলোর তুলনায় শিক্ষার গড় মান ভালো নয়। মাদ্রাসার বিরুদ্ধে সন্তানদের চরমপন্থী করে তোলার অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ।
উইকিলিকসের ফাঁস করা নথিতে দেখা যায়, বাংলাদেশের অনিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসাগুলোর জন্য একটি মান পাঠক্রম তৈরি ও প্রয়োগের প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কীভাবে দেয়া হবে তা দু’দেশের সমন্বিত পরিকল্পনায় আছে বলে মার্কিন গোপন বার্তায় জানান মরিয়ার্টি।
মাদ্রাসা পাঠক্রম উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের দেয়া এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়। ডিএফআইডি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
গত সপ্তাহে মাদ্রাসার অর্থের উত্স তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে সরকার, উল্লেখ করে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিযবুত তাহরির মাদ্রাসায় ঘাঁটি গাড়ছে—এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়।
র্যাবকে ট্রেনিং দিয়েছে যুক্তরাজ্য : ২০০৪ সালের ২৬ মার্চ যাত্রা শুরু করে সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ বাহিনী র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ক্রসফায়ার/বন্দুকযুদ্ধ/এনকাউন্টারের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূতভাবে প্রায় ১ হাজার মানুষ ‘হত্যা’র অভিযোগ রয়েছে এ বাহিনীর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলায় অভিযুক্ত যেমন রয়েছে, তেমনি নিরপরাধ লোকও রয়েছে বলে অভিযোগ। র্যাবের পক্ষ থেকে গত মার্চ মাসে জানানো হয়, বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের মোট সংখ্যা ৬২২। গত ক’মাসে গড়ে ২৫-৩০টি ক্রসফায়ারের ঘটনা ঘটেছে। দেশ-বিদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো র্যাবের কার্যক্রমের বিরোধিতা করে আসছে। দেশের উচ্চ আদালতও ‘ক্রসফায়ারের নামে মানুষ হত্যা বন্ধে’ র্যাবের প্রতি নির্দেশ দেয়।
ফাঁস হওয়া তারবার্তা থেকে স্পষ্ট, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য উভয় দেশই বাংলাদেশে সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রম শক্তিশালী করতে চায়। এমনকি র্যাবের কার্যক্রমের প্রশংসাও করেছেন দেশ দুটির কর্মকর্তারা। গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, একটি তারবার্তায় ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টিকে র্যাবের ভূয়সী প্রশংসা করতে দেখা যায়। মরিয়ার্টি বলেন, র্যাব এক সময়ে বাংলাদেশী এফবিআইয়ে (যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা) পরিণত হবে।
অন্য একটি তারবার্তায় মরিয়ার্টি বলেন, যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা তাকে জানিয়েছেন, ব্রিটিশ পুলিশের বিশেষ বিভাগ ন্যাশনাল পুলিশিং ইমপ্রুভমেন্ট এজেন্সির (এনপিআইএ) কর্মকর্তারা ১৮ মাস ধরে র্যাবকে প্রশিক্ষণ দেয়। এ বিষয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দফতরের এক কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, মানবাধিকার রক্ষা বিষয়টি ছিল তাদের প্রশিক্ষণের বিষয়। তবে এ বিষয়ে র্যাবের প্রশিক্ষণ বিষয়ক প্রধান মেসবাহউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি গার্ডিয়ানকে বলেন, গত গ্রীষ্মে দায়িত্ব নেয়ার পর মানবাধিকার বিষয়ে কোনো ধরনের প্রশিক্ষণের তথ্য তার জানা নেই। ফাঁস হওয়া তারবার্তা অনুযায়ী, তিন বছর আগে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি গত অক্টোবরেও এ প্রশিক্ষণ হয়।
মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ, র্যাবের মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউমেন রাইটস ওয়াচ র্যাবকে ‘ডেথ স্কোয়াড’ নামে অভিহিত করে আসছে। র্যাবের সমালোচনায় মুখর অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও। তবে প্রশিক্ষণে সহায়তার বিষয়ে যুক্তরাজ্যে পররাষ্ট্র দফতরের বক্তব্য, তাদের দেশের আইন মেনেই সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
ফুলবাড়ী নিয়ে চাপ যুক্তরাষ্ট্রের : ফুলবাড়ী কয়লাখনিতে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দিতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিয়েছিল বলে উইকিলিকসের ফাঁস করা গোপন নথিতে বলা হয়েছে। এ সম্পর্কে দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহীর সঙ্গে বৈঠক করেন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি। বৈঠকে বৃটিশ প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল কোল মাইনিং ম্যানেজমেন্টকে ফুলবাড়ীতে কয়লা উত্তোলনের অনুমতি দিতে বলেন মরিয়ার্টি।
২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট ফুলবাড়ীতে এশিয়া এনার্জির কয়লা প্রকল্পের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে সেনাদের গুলিতে তিনজন নিহত ও অসংখ্য আহত হয়। এশিয়া এনার্জিরই পরিবর্তিত নাম গ্লোবাল কোল ম্যানেজম্যান্ট।
গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের জুলাই মাসে পাঠানো এক তারবার্তায় মরিয়ার্টি জানান, ‘ফুলবাড়ী কয়লা খনিতে সম্পৃক্ত এশিয়া এনার্জির (পরবর্তীতে গ্লোবাল কোল মাইনিং) ৬০ ভাগ বিনিয়োগ মার্কিন’।
মরিয়ার্টি বলেন, এশিয়া এনার্জির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ প্রকল্প সরকারের অনুমোদন পাবে বলে তারা আশাবাদী।
হাসিনার ভারত-ঘনিষ্ঠতা প্রচার নিয়ে সতর্ক ভারত : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘ভারত-ঘনিষ্ঠতা’ প্রচার বিষয়ে সতর্ক ভারত-উইকিলিকসের ফাঁস করা বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এক তারবার্তায় একথা বলা হয়েছে।
২০০৯ সালের ১৪ জানুয়ারি মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি বাংলাদেশে নিয়ুক্ত তত্কালীন ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের বক্তব্য উদ্ধৃত করে এক তারবার্তায় বলেন, পিনাক বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় যৌথ টাস্কফোর্স গঠনে হাসিনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানাবেন (ভারতের) পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি। এ বিষয়ে ভারত দ্বিপাক্ষিক সহযোতািমূলক কর্মকাণ্ড চায়। তবে ভারত বোঝে যে বাংলাদেশ এ ক্ষেত্রে আঞ্চলিক টাস্কফোর্স গঠনে আগ্রহী হতে পারে। এর ফলে হাসিনার বিরুদ্ধে ‘ভারত-ঘনিষ্ঠতা’র যে প্রচার সে ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সুবিধাজনক অবস্থানে থাকতে পারবেন হাসিনা।
পিনাকের এ বক্তব্য উল্লেখ করে মরিয়ার্টি লেখেন, ভারত প্রায়ই দাবি করে, আন্তর্জাতিক ইসলামী জঙ্গিরা বাংলাদেশকে একটি নিরাপদ আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে; প্রায়ই বাংলাদেশের দুর্বল সীমান্ত পার হয়ে ভারতে ঢুকে বোমা ও অন্যান্য হামলা চালায়।
বাংলাদেশকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে ব্যবহারকারী আসামের ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্টসহ ভারতের চরমপন্থী গ্রুপগুলো দমনে ঢাকাকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানিয়ে আসছে নয়াদিল্লি।
এ বছর ৮ ফেব্রুয়ারির আগে পাঠানো ওই বার্তায় বলা হয়, জেমস এফ মরিয়ার্টিকে পিনাক চক্রবর্তী জানান, ৮ ফেব্রুয়ারি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রণব মুখার্জির ঢাকা সফরের পরিকল্পনা রয়েছে। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনাই হবে ওই সফরের মূল আলোচ্য বিষয়। তিনি জানান, নিরাপত্তা সহযোগিতার উন্নয়নই হবে বাংলাদেশের নতুন সরকারের সঙ্গে ভারতের কাজের ক্ষেত্রে প্রধান গুরুত্বের বিষয়।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিপুল বিজয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। ঐতিহাসিকভাবে নয়াদিল্লির সঙ্গে আওয়ামী লীগের সুসম্পর্ক রয়েছে বলে তারবার্তায় উল্লেখ করেন মরিয়ার্টি।
নতুন আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে নিরাপত্তা ও অন্যান্য ইস্যুতে ভারত পারস্পরিক সহযোতািমূলক সম্পর্কের উন্নয়ন চায় বলে জানান পিনাক। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর আঞ্চলিক টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাবে ভারতের সমর্থন রয়েছে বলে জানান হাইকমিশনার। কিন্তু বহুপাক্ষিক সহযোগিতার পাশাপাশি দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ব্যাপারে জোর দেন তিনি

No comments:

Post a Comment