Wednesday 29 December 2010

বিতর্কিত শিক্ষানীতি পাসের বছর : আলোচিত-সমালোচিত বহু পদক্ষেপ

দিলরুবা সুমী

শিক্ষা ক্ষেত্রের বেশকিছু বিষয় ২০১০ সালজুড়ে আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে। এর মধ্যে বছরের শেষে বহুল বিতর্কিত প্রথম জাতীয় শিক্ষানীতি সংসদে পাস হয়। বছরের শুরু থেকে মাঝামাঝি পর্যন্ত আলোচনা-সমালোচনার শীর্ষে ছিল বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির বিষয়টি। প্রায় ৫ বছর পর এবারই খুলে বহুল প্রতীক্ষিত এ এমপিওভুক্তির জট। এ ছাড়া নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাস ও এক বছরের মধ্যে নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ প্রতিষ্ঠানের ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টিও অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল।
প্রথম থেকে দশম শ্রেণীর সব ছাত্রছাত্রীকে এ বছর থেকে প্রথম বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যবই দেয়ার বিষয়টি সারাদেশে ব্যাপক হইচই ফেলে দিয়েছিল। আর পরে বোর্ডের এ বিনামূল্যের কিছু বই ২০১১ সালের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ছাপিয়ে আনার উদ্যোগও সমালোচিত হয়েছে। এদিকে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র সরকারি ছাপাখানা থেকেই ফাঁসের ঘটনা দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি করে। অন্যদিকে সরকারি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক এবং সহকারী শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতার পরিচয় দিয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী দেশবাসীর বাহবা পেয়েছেন। কিন্তু সুপারিশ না মানায় দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের বিরাগভাজন হয়েছেন। যদিও ফল প্রকাশের আগে এ নিয়োগের জন্য দেশব্যাপী ব্যাপক অর্থ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছিল। আর শিক্ষামন্ত্রী রমজানের শুরুতে হঠাত্ করেই যানজট নিরসনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক মাসের ছুটির ঘোষণা দিয়ে সমালোচিত হন।
এ ছাড়া নামকরা স্কুল, কলেজ, বেসরকারি মেডিকেল কলেজ এমনকি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ছাত্রছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে নানা অনিয়ম, লাখ লাখ টাকার বাণিজ্য, সরকারের নীতিমালা ভঙ্গ করে অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় বছরের শুরুতে সবমহলে ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। এর জন্য ক্ষমতাসীন দলের এমপি থেকে শুরু করে সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এসব নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন।
ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগ ওঠা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ছিল ভিকারুননিসা নূন স্কুল, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল, মণিপুর হাইস্কুল, ইডেন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ঢাকা কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ, তিতুমীর কলেজ, তেজগাঁও কলেজ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, যশোর এমএম কলেজ, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, বিএম কলেজ, কারমাইকেল কলেজ, বিএল কলেজ, এডওয়ার্ড কলেজ ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বড় স্কুল-কলেজ।
এ বিষয়ে ‘অনিয়ম বন্ধ’ করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন ছাড়া কোনো কিছুই করা সম্ভব হয়নি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনের কলেজগুলোতে বাণিজ্য ঠেকাতে অবশেষে অনলাইনে ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। শিশুদের ওপর পড়ার চাপ কমাতে আগামী ২০১১ সালের শিক্ষাবর্ষে ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে লটারির মাধ্যমে প্রথম শ্রেণীতে শিক্ষার্থী ভর্তির সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
এ ছাড়া চলতি-২০১০-১১ অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি, টিউশন ফি ও অন্যান্য চার্জসহ যে কোনো ধরনের সেবা এবং সরবরাহের ওপর সরকারের সাড়ে ৪ শতাংশ কর আরোপের বিষয়টি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এতে করে বর্তমানে শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন শিক্ষাবিদ ও সাবেক ছাত্রনেতারা। বছর বছর ভর্তি ফি ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির সঙ্গে নতুন করে বেতনের ওপর করারোপ করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এরই চূড়ান্ত প্রতিফলন ঘটে গত ২৪ জুলাই। সেদিন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ আন্দোলনে রাস্তায় নামে। দিনভর সড়ক অবরোধ করে রাখেন। তাদের আন্দোলনে হামলা চালায় পুলিশ। এতে অনেক ছাত্র আহত হয়। গাড়ি ভাংচুরের মতো ঘটনাও ঘটে। ফলে সরকারকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের ভর্তি ফি, টিউশন ফির ওপর আরোপিত ভ্যাট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু ইংরেজি মাধ্যমের স্কুল-কলেজে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থেকে আরোপিত ভ্যাটের বিষয়ে কিছুই বলা হয়নি।
শিক্ষানীতি: গত ৭ ডিসেম্বর জাতীয় শিক্ষানীতি প্রথম জাতীয় সংসদে পাসের বিষয়টি শিক্ষাখাতের অন্যতম একটি বড় অর্জন বলে মনে করছে সরকার। এর আগে স্বাধীনতার পর আটটি শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছিল।
এবারের শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটি গঠন থেকে শুরু করে সংসদে পাস করা পর্যন্ত এই নীতি সারাদেশে ব্যাপক আলোচিত ও সমালোচিত হয়েছে। বিশেষ করে মাদ্রাসা শিক্ষা ও অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষার নতুন নিয়মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষক সংগঠন ও ইসলামী দলগুলো। সম্মিলিত ওলামা মাশায়েখ পরিষদ ইসলামী শিক্ষাকে খাটো করার অভিযোগ তুলে ২৬ ডিসেম্বর হরতাল পালনের ঘোষণা দিয়েছিল। পরে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হলে ২৫ ডিসেম্বর হরতাল প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
এমপিওভুক্তি : প্রায় পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর গত ৭ মে এক হাজার ২২টি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করে তালিকা প্রকাশ করা হয়। তালিকা প্রকাশের আগে মন্ত্রী, এমপিসহ সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সুপারিশে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। সচিবালয়ের বিভিন্ন স্থানে নোটিশ টানিয়েও কাজ হয়নি। পরে বাধ্য হয়ে এমপিওভুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সচিবালয়ের বাইরে বসে প্রায় সাত হাজার আবেদন থেকে বাছাই করে তালিকা চূড়ান্ত করেন।
এই তালিকা প্রকাশের পরপরই দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। সরকারি দলের নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিদের তদবির করা কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিও পাননি। বিএনপি-জামায়াত নেতাদের গড়া প্রতিষ্ঠানকে এমপিও দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অভিযোগ করে, যোগ্য হওয়া সত্ত্বেও তাদের এমপিওভুক্ত করা হয়নি। এমনকি এমপিও প্রদানে নীতিমালা মানা হয়নি এবং ব্যাপক দুর্নীতি-অনিয়ম হয়েছে বলেও অভিযোগ ওঠে।
১০ মে মন্ত্রী পরিষদের সভায়ও প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেখানে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের তোপের মুখে পড়েন শিক্ষামন্ত্রী। মন্ত্রী পরিষদের সভায় এমপিও তালিকা পুনরায় যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী ও উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিন আহমেদকে দায়িত্ব দেন। প্রথমে শিক্ষামন্ত্রী তালিকা পর্যালোচনার কাজ শুরু করেন। পরে গত ১৬ মে শিক্ষামন্ত্রী পুরো দায়িত্ব উপদেষ্টা ড. আলাউদ্দিনের হাতে তুলে দেন। তিনি পুরো বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে নতুন তালিকা প্রকাশ করেন ৩১ মে। এতে আগের তালিকা থেকে প্রায় ১০০ প্রতিষ্ঠান বাদ পড়ে এবং নতুন যোগ হয় প্রায় ৫০০ প্রতিষ্ঠান। সব মিলিয়ে এমপিও পায় এক হাজার ৪৮৩টি প্রতিষ্ঠান।
বিনামূল্যে বোর্ডের বই বিতরণ : প্রাথমিক পর্যায়ের পাশাপাশি মাধ্যমিক স্তরে সব ছাত্রছাত্রীকে বিনামূল্যে বোর্ডের বই বিতরণকে চলতি বছরের সবচেয়ে বড় সফলতা বলে দাবি করছে সরকার। যদিও ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার হিসাবে গরমিলের কারণে চাহিদার তুলনায় কম বই ছাপানো হয়েছে। কোনো নিবন্ধন করা হয়নি এমন স্কুলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তার ওপর বাজারেও কোন বোর্ডের বই বিক্রির জন্য ছাড়া হয়নি। বছরের প্রায় পাঁচ মাস ব্যয় হয়েছে বই বিতরণে। ফলে একটি বিশাল সংখ্যক শিক্ষার্থীকে নতুন বই ছাড়াই প্রথম সাময়িক পরীক্ষা দিতে হয়েছে। এ নিয়ে বছরজুড়েই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ ছিল।
এছাড়া এ বছরই প্রথম ২০১১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণীর উন্নতমানের বোর্ডের বই আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে ভারত থেকে ছাপিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় সরকার। এ বিষয়টিও ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়। এখন দেখার অপেক্ষায় সেই বই সবার কাছে কতটা গ্রহণযোগ্য হয়।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন : দীর্ঘ পর্যালোচনার পর গত ১১ জুলাই নতুন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংসদে পাস হয়। এ বিষয়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মালিকদের মতামত চাওয়া হলে আইন না মানা প্রতিষ্ঠানগুলো শর্তানুযায়ী স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার জন্য আরও ১৫ বছর সময় চায় এবং সরকারের কাছ থেকে জমি বরাদ্দ দেয়ার দাবি জানায়। তাদের দাবি না মেনে সরকার বর্তমান ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আইন না মানা ৪৩টি প্রতিষ্ঠান চিহ্নিত করে এবং তাদের সতর্ক সংকেত দেয়। এর মধ্যে ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়কে লাল সংকেত দেয়া হয়। সতর্ক সংকেত পাওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে শর্ত পূরণ করার সময় দেয়া হয়েছে। এই সময়ে শর্ত পূরণ করতে না পারা প্রতিষ্ঠানে সেপ্টেম্বরের পর থেকে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
শিক্ষক নিয়োগ : গত ৯ জুলাই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের অধীনে সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। দেশের ১ হাজার ৯৬৮টি সহকারী শিক্ষক/শিক্ষিকা পদের বিপরীতে এ পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন সারাদেশের ৯টি শিক্ষা অঞ্চলের মোট ১ লাখ ৩২ হাজার পরীক্ষার্থী। কিন্তু পরীক্ষার আগের দিন রাতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার একটি পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রশ্নপত্রের অনুলিপিসহ ১৬৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে সরকারি ছাপাখানা বিজি প্রেসের কয়েক কর্মচারীও ছিল। পরবর্তী সময়ে বিজি প্রেসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের এ ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাত্ক্ষণিকভাবে পরীক্ষাটি স্থগিত করে। কয়েকদিন আগে মাউশি থেকে এ পরীক্ষার নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ৭ জানুয়ারি।
এ বছর আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল সরকারি প্রাথমিক স্কুলে ১ হাজার ৮৫২ জন প্রধান শিক্ষক ও ৩০ হাজার ৭১২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক নিয়োগ। এ নিয়োগে এমপিদের সুপারিশ মানা হয়নি বলে অভিযোগ তুলে গত ২০ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রায় ২০ এমপির তোপের মুখে পড়েছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী ডা. মো. আফসারুল আমীন।
অন্যান্য : নতুন নীতিমালা করেও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটির দুর্নীতি-অনিয়ম বন্ধ করা সম্ভব হয়নি। গত বছরও আগের মতোই বহাল তবিয়তে চলছে দুর্নীতি। ব্যবস্থাপনা কমিটির গঠন থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড, ছাত্রছাত্রী ভর্তি, শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সহপাঠ্য বই সিলেকশনসহ সব ক্ষেত্রেই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এই কমিটির অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বাধ্য হয়ে বিভিন্ন শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোট ও জাতীয় শিক্ষক-কর্মচারী ফ্রন্ট অভিযোগ সেল গঠন করেছে। বক্তব্য-বিবৃতির মাধ্যমে এ বিষয়ে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ চেয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি।
এদিকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার পর এ বছর শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন যোগ হয়েছে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা (জেএসডি) ও জুনিয়র দাখিল পরীক্ষা (জেডিসি)। এ পরীক্ষার সময়সূচি নিয়েও অভিভাবক মহলে ছিল কিছু অভিযোগের সুর। এছাড়া প্রথমবারের মতো এ বছর পঞ্চম শ্রেণী শেষে এবতেদায়ির শিক্ষার্থীরাও প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা দিয়েছে।
পাঁচ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের জন্য এক বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা স্বল্প পরিসরে চালু করা হয়েছে ২০১০ সালে। ভর্তিচ্ছু ছাত্রছাত্রীদের চাপ কমাতে ৮২টি সরকারি মাধ্যমিক স্কুলে চলতি শিক্ষাবর্ষে দ্বিতীয় শিফট চালু করা হয়েছে। এসব স্কুলে এন্ট্রি পয়েন্টে অর্থাত্ যে শ্রেণী থেকে স্কুল শুরু হয়েছে সেসব শ্রেণীতে ১০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়েছিল। আগামী ২০১১ শিক্ষাবর্ষে এসব স্কুলে ৭০ হাজার অতিরিক্ত শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। এ বিষয়গুলোকে এ বছর শিক্ষা খাতের ইতিবাচক দিক বলে বিবেচিত হয়েছে।
এছাড়া বছরজুড়েই মাসের শেষে ও ঈদের আগে যথাসময়ে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-বোনাসের সরকারি অংশ না পাওয়ার বিষয়টি শিক্ষক মহলে সমালোচিত হয়েছে।

No comments:

Post a Comment