Friday 8 October 2010

দেশের অবস্থা তুলে ধরে বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান : দেশ এখন বাজিকরদের হাতে



তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ও সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেছেন, দেশ এখন বাজিকরদের হাতে। যেখানে নাগরিকদের কোনো পাওনা বা প্রাপ্য রয়েছে সেখানেই বাজিকররা একটা উত্কট ব্যস্ততায় উন্মত্ত। ভর্তিবাজি, নিয়োগবাজি, টেন্ডারবাজি, দলবাজি, মতলববাজি—এত বিভিন্ন ধরনের বাজির রকমফের দেখে দেশের লোক দিশেহারা। তিনি বলেন, মানুষ নিপীড়নের পরিবর্তে স্বাধীনতা চায়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কেবল স্বাধীনতার কথা বলে, কিন্তু স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেয় না। গতকাল রাজধানীর যাত্রী সম্মেলন কক্ষে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ গভর্নেন্স স্টাডিজ (আইজিএস) আয়োজিত ‘দ্য স্টেট অফ গভর্নেন্স ইন বাংলাদেশ ২০০৯’ গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে তিনি দেশের বর্তমান অবস্থা, মেধাশূন্য প্রশাসন, জাতীয় সংসদের আইন পাস, নির্বাচন কমিশন, গণতন্ত্রের অবস্থা নিয়ে তার অভিমত তুলে ধরেন।
বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, সরকার মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে সীমাহীন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কৃষকের কেরোসিন, বিদ্যুত্ পেতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হয়। খাদ্য নিরাপত্তায় সরকারের কার্যাবলি বিভ্রান্তিকর। খাসজমি পুনর্বণ্টনে দুর্নীতি, কৃষিপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে দুর্বল কাঠামোর কারণে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি।
মেধাশূন্য প্রশাসনের কথা উল্লেখ করে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, যেখানে একটা চতুর্থ শ্রেণীর চাকরির জন্য তিন লাখ টাকা গুনতে হয় সেখানে মেধাভিত্তিক প্রশাসন কেমন করে আমরা গড়ব? তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন গণতান্ত্রিক না হয়ে কর্তৃত্ববাদী হয়ে উঠেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই আমাদের প্রশাসনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে অধঃস্তন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজের তদারকি দিন দিন কমে গেছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশে যারা অতিরিক্ত উত্সাহ দেখিয়েছেন তাদের পক্ষে দলনিরপেক্ষ প্রশাসনে শাসন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এর ফলে সরকারি সেবাখাতে সিস্টেম লস ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পায়।
সম্প্রতি সংসদে পাসকৃত বিদ্যুত্ জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০-এর সমালোচনা করে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, এই বিধান অনুযায়ী বিদ্যুত্ বা জ্বালানি আমদানি, উত্পাদন, পরিবহন বা বিপণন, সঞ্চালনের ব্যাপারে সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা যাবে না। এ সংক্রান্ত কোনো কাজে জড়িত সরকারি কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা বা কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। এ বিশেষ আইনের ফলে নির্বাহী বিভাগের যেমন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হলো তেমনি অনিয়মের প্রতিকারের জন্য আদালতের দরজাও বন্ধ করা হলো।
বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, দেশের সুশীল সমাজ নির্বাচনের জন্য নানা সুপারিশ করেছে। কিন্তু রাজনৈতিক দলগুলো সেসব সংস্কার গ্রহণ করেনি। ফলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে তা বাস্তবায়ন করাও সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির প্রতি সরকারের আগ্রহ থাকলেও সর্বস্তরে এর অংশীদারিত্বের অভাব রয়েছে। তিনি জানান, শ্রমিক অভিবাসন বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স অর্জনকারী খাত হলেও সরকারের অভিবাসন প্রক্রিয়া শ্রমিকদের স্বার্থপরিপন্থী।
সংবিধান পরিবর্তনের বিষয়ে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, সংসদের মাধ্যমেই এটা হওয়া উচিত। তবে সংসদের বর্তমান হ্যাঁ বা না ভোট প্রক্রিয়াটি অস্বচ্ছ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি ড. মো. গোলাম সামদানী ফকিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আইজিএসের পরিচালক ব্যারিস্টার মনজুর হাসান। গবেষণার সার-সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন আইজিএসের সমন্বয়কারী ইরাম শেহরিন আলী ও আইজিএস-এর হেড অফ প্রোগ্রাম ক্রিস্টিনা রোজারিও। গবেষণায় জনগণের অধিকার, এগুলোর প্রতি সাড়া এবং দীর্ঘমেয়াদি বাস্তবায়ন কৌশলের জন্য জ্বালানি, খাদ্য নিরাপত্তা, ই-গভর্নেন্স ও অভিবাসন—এই চারটি গুরুত্বপূর্ণ খাত নিয়ে গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, আমাদের দেশের নির্বাচন কমিশনের কর্মকাণ্ড তেমন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। এবার নির্বাচন কমিশন যেসব গুরুদায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নিয়েছে, তা পালন করার মতো দক্ষ ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তার চাহিদা মেটাতে হবে। যাতে নির্বাচন আইনের লঙ্ঘন দ্রুত এবং দৃষ্টান্তস্বরূপ কঠোরতার সঙ্গে প্রতিরোধ করা যায়। দেশের সুশীল সমাজ নির্বাচনের জন্য নানা সংস্কারের সুপারিশ করে আসছে। নির্বাচন কমিশনের অনেক সংস্কার প্রস্তাবই রাজনৈতিক দলগুলো গ্রহণ করেনি। এ পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনকে বার বার হেনস্তা করা হয়েছে। এজন্য নির্বাচন কমিশনও কিছুটা দায়ী। নির্বাচন নিয়ে মামলা হলেও সুরাহা হয় না; আইন ভঙ্গের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও হয়নি। দেশের রাজনৈতিক মাস্তানি সুবিদিত। কেউই কর্তৃপক্ষের শাসন মানতে চায় না। প্রত্যেকে একেকজন ক্ষুদে কর্তৃত্ববাদী।
সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের গণতন্ত্রের কাঠামো বড়ই ভঙ্গুর। বাংলা ভাষায় আত্মীয়ের সম্পর্কের শব্দের সংখ্যা ২১৫ উল্লেখ করে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমাদের দেশের প্রথম আনুগত্য আত্মীয়ের প্রতি। পরিবারতন্ত্র নিয়ে এরই মধ্যে নানাজনে সাহকাহন গেয়েছেন। আমাদের দ্বিতীয় আনুগত্য পাড়াগত বা অঞ্চলের প্রতি। শত অপকর্মের মহাজন তার নিজের অঞ্চলে ‘হামার ছাওয়াল’ বা ‘হামার মাইয়া’। সেখানে তিনি সেবিত এবং প্রচুর ভোট পান।
বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বলেন, গণতন্ত্রের আদর্শটা বেশ দীর্ঘজীবীই বলতে হবে। কিন্তু এর স্বাস্থ্য ও সাফল্য প্রায়ই অনিশ্চিত। আমরা নিজেদের অক্ষমতা ঢেকে রাখার জন্য প্রায়ই বলি, দেশে গণতন্ত্রকে সুযোগ দেয়া হয়নি। গণতন্ত্রের নিজস্ব কোনো অবয়ব বা প্রাণ নেই। গণতন্ত্র স্বয়ংক্রিয় নয়। এর ভেতরে একটা তারল্য রয়েছে, যে পাত্রে অবস্থান করে তার আকার পায়। হুজ্জতে বাঙালের দেশে গণতন্ত্র যে কী ভঙ্গুর হতে পারে তার নিদর্শন আমাদের চোখের সামনে ভাসছে। ব্যাংকে আগুন জ্বালিয়ে, রিকশাওয়ালাকে জীবন্ত দগ্ধ করে, যত্রতত্র বোমা ফাটিয়ে, পটকাবাজি করে এবং বাসে বারুদ ছড়িয়ে দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দলীয় নন্দীভৃঙ্গীরা গণতন্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি। অত্যন্ত স্বল্পকালের জন্য ক্ষমতায় আরোহণ করে দ্রুত তাদের পদস্খলন ঘটেছে মাত্র।
আইন প্রণয়ন সম্পর্কে হাবিবুর রহমান বলেন, আদালতের এখতিয়ার ক্ষুণ্ন করে কেবল প্রশাসনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার বিবেচনা করা হলে তা আমাদের জন্য মঙ্গল বয়ে নিয়ে আসবে না। এক সময় বলা হতো, নতুন আইন প্রণয়নের সময় আইন প্রণেতাদের হাত কাঁপা উচিত। সেদিন গত হয়েছে যখন বলা হতো, ন্যূনতম সরকারই শ্রেষ্ঠ সরকার। সমাজের প্রত্যাশা বৃদ্ধির সঙ্গে আইনের তদারকি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে আইন প্রণয়ন যদি মুন্সিদের হাতে ছেড়ে দেয়া হয় এবং সংসদে হ্যাঁ বা না বলেই তার বিবেচনা সীমিত থাকে, তবে কর্তার ইচ্ছায় কানুন হবে। আর সে হবে এক বিষম ব্যাপার। বিশেষ আইন চিরকালের হতে পারে না। ৫ বছরের ক্ষমতায়ন একটা স্বল্পকালীন ব্যাপার। দুই-তৃতীয়াংশ ভোট সরকারকে দিশেহারা করে তুলতে পারে। সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে সংসদ সদস্যদেরই একমত হতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের চেয়ে অশান্তিময় দেশও পৃথিবীতে রয়েছে। তাদের সংখ্যা প্রায় ৩৫। দক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের স্থান ৮৬, ভুটানের নিচে। আমাদের দেশে প্রায় চার কুড়ি রাজনৈতিক দল আছে, যাদের সাইনবোর্ড ও দলীয় নেতার পোর্টফোলিও ব্যাগ ছাড়া প্রায় কোনো অস্তিত্ব নেই।
স্থানীয় শাসন সম্পর্কে বিচারপতি হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা দেশের প্রশাসনে নাগরিকদের শরিকানা বৃদ্ধি করতে পারি না। দেশের অভ্যুদয়ের কাল থেকে আমরা সংবিধান প্রদত্ত স্থানীয় শাসনের বিধান লঙ্ঘন করে আসছি। এ ব্যাপারে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ও আমরা পালন করিনি। প্রত্যেক দলের সাধারণ সম্পাদক সাধারণত স্থানীয় সরকারমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হন। তার লক্ষ্য থাকে রাজনৈতিক সংগঠনের দিকে। গত চল্লিশ বছরের অভিজ্ঞতার পর আমরা এ ব্যাপারে মত পরিবর্তন করার কোনো অবকাশ দেখিনি। এ রীতিকে স্থানীয় শাসনের জন্য ক্ষতিকর উল্লেখ করেন তিনি।
প্রশাসনের বিরুদ্ধে সমালোচনা প্রসঙ্গে দুঃখ প্রকাশ করে সাবেক প্রধান বিচারপতি বলেন, দেশের প্রশাসন সম্পর্কে বিভিন্ন মতামত আসতেই পারে। না থাকাটাই অস্বাস্থ্যের লক্ষণ। তবে সংবিধানে রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে যেসব মূলনীতি লিপিবদ্ধ রয়েছে তা তো আমাদের বিভক্ত চিন্তার ক্ষেত্রে সহজেই একটা মতৈক্য সৃষ্টি করতে পারে। জনগণ সব ক্ষমতার মালিক এটা যে একটা নিছক সাংবিধানিক আপ্তবাক্য নয় তা প্রতিষ্ঠাকল্পে আমাদের কঠোরভাবে ব্রতী হতে হবে। গত চল্লিশ বছরে হনন-আত্মহননে আমরা হিসাবদিহি নীতির যে অবমাননা করেছি তা বড়ই হৃদয়বিদারক।
গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য : প্রতিবেদনে বলা হয়, এ দেশে অনেক নীতি বিদ্যমান, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এর বাস্তবায়ন নেই। প্রতিবেদনে বাস্তবায়নের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে।
জ্বালানি খাতে শাসন প্রক্রিয়া বিষয়ে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, এ খাতের উন্নয়নের জন্য বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করা হলেও প্রণোদনার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কার্যকারিতা নিয়ে উদ্বেগ, সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য গৃহীত নীতি বাস্তবায়নে সমস্যা এবং সরকারের স্বল্পমেয়াদি কর্মসূচিকে এ খাতের শাসন প্রক্রিয়ার চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা হয়েছে। এ খাতের উন্নয়নের জন্য রাজনৈতিক অঙ্গীকার, আমলা, বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীর জন্য লাগসই প্রণোদনা, সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনে দ্রুত সাড়া দিতে পারে—এমন একটি স্বায়ত্তশাসিত রেগুলেটরি কমিটি এবং জনঅংশগ্রহণে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
খাদ্য নিরাপত্তা বিষয়ে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, সরকারের নীতি ও বাস্তবায়নের মধ্যে ফারাক, অতিদরিদ্রদের খাদ্য পাওয়ার বিষয়ে তথ্যে বিভ্রান্তি, খাসজমি পুনর্বণ্টনে দুর্নীতি, চাষাবাদ সামগ্রীর বাজার নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির অকার্যকর ব্যবস্থা ও দুর্বল ক্রয় কাঠামো। এ খাতের উন্নয়নের জন্য নীতি বাস্তবায়নে অতিদরিদ্রদের গুরুত্বদান, খাদ্যের সহজলভ্যতা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রান্তিক কৃষক ও ভূমিহীনদের ভূমির মালিকানা ও দখল নিশ্চিত করা, তদারকি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় বাড়ানো এবং খাসজমির ওপর নিয়ন্ত্রণ ও অধিকার প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়েছে।
ই-গভর্নেন্স বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির মাধ্যমে এ খাতে সরকারি সহযোগিতা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়া ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্বল মালিকানাবোধ এবং দরিদ্রদের সেবা দেয়ায় অনাগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, উন্নয়নের জন্য আইসিটি সুবিধাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে। এ খাতের উন্নয়নের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রক্রিয়াগত সংস্কারকে জোরদার করাসহ আইসিটি আইন ২০০৯ সংশোধনের মাধ্যমে তথ্যের নিরাপত্তা বাড়ানো, ৩০৬টি করণীয় বিষয়ে তদারকি বাড়ানো, সরকারি কর্মকর্তাদের মধ্যে মালিকানাবোধ তৈরি, ই-গভর্নেন্স বিষয়টিকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা, জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রযুক্তি ব্যবহারের ব্যবধান কমানো ও গরিব মানুষের জন্য সেবা নিশ্চিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।
অভিবাসন বিষয়ে গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যে দেখে গেছে, শ্রমিকদের জন্য বিদেশে কাজ করতে যাওয়া ব্যয়বহুল, রিক্রুর্টিং এজেন্সিগুলোর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণহীন, বিদেশ গমন প্রক্রিয়া অনেক দীর্ঘ ও জটিল এবং অভিবাসন প্রক্রিয়ায় দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাব রয়েছে। গবেষণায় অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্বদান, বিদেশের সঙ্গে শ্রমিকদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উত্তম দরকষাকষি, স্বচ্ছ ও কার্যকর অভিবাসন প্রক্রিয়ার জন্য তদারকি কৌশল উদ্ভাবন এবং বিদেশ থেকে অর্থ পাঠানোর সহজ উপায় বের করার সুপারিশ করা হয়েছে।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/10/07/47531