Tuesday 29 November 2011

মদপানে মৃত ছাত্রলীগ নেতার প্রতিকৃতি স্থাপনের প্রতিবাদ কুয়েট শিক্ষকদের তিন দিন ক্লাস বর্জন

সংগ্রাম ডেস্ক : নগরীর ফুলবাড়ীগেট এলাকায় অবস্থিত খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ কুয়েট শাখার সভাপতির প্রতিকৃতি স্থাপন করার প্রতিবাদে কুয়েট শিক্ষকরা তিন দিন ক্লাস বর্জন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গতকাল সোমবার শিক্ষক সমিতি নতুন কর্মসূচি ঘোষণায় এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। নতুন কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক আজ মঙ্গলবার থেকে তিনদিন এ কর্মসূচি পালন করবেন।
কুয়েট শিক্ষক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মো. মাসুদ গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় জানান, মদপানে মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর প্রতিকৃতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে স্থাপনকে আমরা নিন্দা জানাই। বিধি বর্হিভূতভাবে স্থাপিত এ প্রতিকৃতি অপসারণের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে গত রোববার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। এ নিয়ে আমরা কর্মসূচিও পালন করেছি। কর্মসূচি চলাকালেই প্রতিকৃতিটি উন্মোচণ করা হয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সে সময়ের মধ্যে প্রতিকৃতিটি অপসারণ করেননি। তাই নতুন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হয়েছি। নতুন কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক মঙ্গলবার থেকে তিনদিন শ্রেণীকক্ষে কোনো রকম পাঠদান করবেন না।
গত বছরের ২২ নবেম্বর কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারায় এক বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে অতিরিক্ত মদপান করে এ কে এম আহসান উল্লাহ ভূঁইয়া মেহেদী মারা যান। তিনি কুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ছাত্র ও কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তারই স্মৃতি রক্ষার জন্য সম্পূর্ণ বেআইনী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিশালাকৃতির এক প্রতিকৃতি স্থাপন করা হয়। যা গত বুধবার খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক আনুষ্ঠানিক উন্মোচণ করেন।
মদপান করে যে শিক্ষার্থী মারা গেছে তার স্মৃতি রক্ষার নামে ক্যাম্পাসে চলতি বছর অক্টোবর মাসের শেষদিকে ক্যাম্পাসের খান জাহান আলী হলের সামনে তার একটি স্মৃতিফলক স্থাপন করা হয়। ফলকটি স্থাপনের পর থেকে কুয়েটের শিক্ষকরা প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠেন।

Wednesday 23 November 2011

আত্মীয় রাহুগ্রাসে পিএসসি


আসাদুজ্জামান সাগর

ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়কুলের রাহুগ্রাসে বন্দি এখন সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। প্রতিষ্ঠানটিতে চলছে ব্যাপক আত্মীয়করণ। বড় পদ, ছোট পদ—সব ক্ষেত্রেই স্বজনদের ছড়াছড়ি। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, উপদেষ্টা ও এমপিসহ সরকারি দলের প্রভাবশালীদের আত্মীয় এবং অনুগতরা ছাড়া এ সংস্থায় এখন অন্য কারও ঠাঁই নেই। কমিশনে বর্তমানে ১৪ সদস্যের ১৩ জনই দলীয় অনুগত ও প্রভাবশালীদের আত্মীয়। সরাসরি আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত ও জনতা মঞ্চের রূপকারও আছেন কয়েকজন। পিএসসির সদস্য হয়েও সর্বেসর্বার আসনে আছেন আওয়ামী যুবলীগের বর্তমান কমিটির আন্তর্জাতিক সম্পাদক ড. এমরান কবির চৌধুরী। তত্ত্বাবধায়ক সময়ে নিয়োগ পাওয়া চেয়ারম্যানসহ সরকার সমর্থক বাদে অন্যরা প্রচণ্ড চাপ এবং কোণঠাসা হয়ে আছেন। দাবড়ে বেড়াচ্ছেন সরকার সমর্থকরা।
সংবিধানের ১৩৭ থেকে ১৩৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ রাষ্ট্রপতি দিলেও তাতে অনানুষ্ঠানিক নির্দেশনা আসে সরকারের নির্বাহী বিভাগ ও সরকারি দল থেকেই। নিয়োগের পর তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয় অদৃশ্য কোনো শক্তিবলয় থেকেই। অথচ হাইকোর্টের রুলিং অনুযায়ী এসব ব্যক্তির কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ নেই।
প্রতিষ্ঠানটির এমন দুরবস্থায় চরম হতাশা ব্যক্ত করেছেন বিজ্ঞজনরা। বিশিষ্ট সমাজচিন্তক, অর্থনীতিবিদ ও গবেষক সাবেক কেবিনেট সচিব ড. আকবর আলি খান বলেছেন, পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সুনাম ছিল তা আমি কখনোই শুনিনি। কমিশনে দলীয় ও আত্মীয়করণ, সেই ঊনবিংশ শতাব্দীর পরীক্ষা পদ্ধতি, ৪০ বছর আগের কারিকুলাম, চাকরির নিয়োগ দুর্নীতি প্রশাসনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পিএসসিতে আগের সরকারগুলোও দলীয়করণ করেছে। তবে বর্তমান সরকার যেভাবে একে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ করছে, তাকে নগ্নই বলা যায়। তিনি বলেন, কমিশনের সদস্যদের নিয়োগের যোগ্যতা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার কোনো মাপকাঠি সংবিধানে নেই। সরকার ইচ্ছা করলেই নিয়ম ও আইন করে দিতে পারে; কিন্তু কোনো সরকারই তা করেনি।
কে কার আত্মীয় এবং দলীয় : পিএসসিতে পূর্ণ প্যানেলের ১৫ সদস্যের মধ্যে বর্তমানে ১৪ জন রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট পিএসসি সূত্র এবং অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসব সদস্যের মধ্যে ১৩ জনই আত্মীয় ও দলীয় অনুগত। সদস্যের জ্যেষ্ঠতার দিক থেকে ষষ্ঠ অবস্থানে রয়েছেন অধ্যাপক রাশিদা বেগম। তিনি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানকের বড় বোন। ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তিনি পিএসসিতে যোগদান করেন। এর আগে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন।
মোহাম্মদ হোসেন সেরনিয়াবাত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর চাচাতো ভাই। আর আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাই। ২০০৯ সালের ৯ এপ্রিল সেরনিয়াবাত পিএসসিতে যোগদান করেন। এর আগে তিনি প্রশাসনের ভুতাপেক্ষ যুগ্ম-সচিব ছিলেন। মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ক্রয়সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার আসামি ছিলেন সেরনিয়াবাত। ২০০১ সালে দুর্নীতি দমন ব্যুরো এ মামলা করেছিল। বর্তমান সরকারের সময় তিনি সে মামলা থেকে খালাস পান।
অধ্যাপক এমরান কবির চৌধুরী যুবলীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল তিনি যোগদান করেন। এর আগে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। নিয়োগ পাওয়ার পর তিনি বিসিএস পরীক্ষা ও নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। টাকা নিয়ে চাকরি না দেয়ার অভিযোগে সম্প্রতি তার বাসায় হামলাও করেছিল ছাত্রলীগ।
পিএসসির আরেক সদস্য এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী। কথিত আছে, তিনি ১৯৯৬ সালে সচিবালয়ের সামনে জনতার মঞ্চের অন্যতম রূপকার ছিলেন। ২০০৯ সালের ২৩ জুন যোগদান করেন। এর আগে তিনি অতিরিক্ত আইজিপি ছিলেন। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে পিএসসির চেয়ারম্যান ড. সা’দত হোসাইনকে পদ থেকে সরিয়ে দিতে তার নেতৃত্বে ষড়যন্ত্র হয়েছিল। তিনি এজন্য রাষ্ট্রপতির কাছে ‘কর্ম কমিশনে স্থবিরতা’ শীর্ষক চিঠি দিয়েছিলেন।
সৈয়দ হাসিনুর রহমান সাবেক প্রভাবশালী আমলা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের আপন ভাগ্নে। ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই যোগদান করেন। এর আগে তিনি অতিরিক্ত সচিব ছিলেন।
ইকরাম আহমেদ সংরক্ষিত মহিলা আসনে আওয়ামী লীগ এমপি তারানা হালিমের বোনজামাই। ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই তিনি যোগদান করেন। এর আগে তিনি অতিরিক্ত সচিব ছিলেন।
অধ্যাপক ডা. ফরিদা আদিব খানম আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের আপন ভাগ্নি। তিনিও ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই যোগদান করেন।
আওয়ামী লীগের অনুগত আরেক পিএসসি সদস্য মুহম্মদ লিয়াকত আলী খান। কথিত আছে, তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ এবং জনতার মঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর যোগদান করেন। এর আগে তিনি কারা মহাপরিদর্শক ছিলেন।
মো. ওয়াজেদ আলী খান প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় বলে পরিচিত। ২০১০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর তিনি যোগদান করেন। এর আগে তিনি অতিরিক্ত সচিব ছিলেন।
ড. ফখরুদ্দীন-মইন উ আহমেদ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিয়োগ পাওয়া বাকিদের ব্যাপারেও দলীয় ও আত্মীয়করণের অভিযোগ রয়েছে। মো. নুরুন নবী আওয়ামী লীগের অনুগত এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল বলে পরিচিতি রয়েছে। অধ্যাপক সুরাইয়া বেগম পিএসসি চেয়ারম্যান ড. সা’দত হোসাইনের কাছের লোক বলে ওই প্রতিষ্ঠানে পরিচিতি আছে। ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবিদুর রেজা খান সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমেদের ঘনিষ্ঠ। এহসান শামীম পিএসসি চেয়ারম্যান ড. সা’দত হোসাইনের দূরসম্পর্কীয় আত্মীয় বলে পরিচিত। এছাড়া কমিশনের সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান সরকারের অনুগত হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। জানা যায়, গোপালগঞ্জ কোটায় তিনি কমিশনের সচিব হন।
কোণঠাসা বর্তমান চেয়ারম্যান ও তার অনুগতরা : আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর নানা কারণে কোণঠাসা বর্তমান চেয়ারম্যান ও তার অনুগতরা। দলীয় নিয়োগ, ২০০ নম্বরের ভাইভা পরীক্ষা, কোটা পদ্ধতি সংস্কার—এসব বিষয়ে সরকার এবং কমিশনের মধ্যে দ্বিমত হয়। পরীক্ষা, প্রশ্ন পদ্ধতি, খাতা মূল্যায়ন, মান উন্নয়নে কমিশনের উদ্যোগের বিরোধিতা করছে সরকার অনুগত সদস্যরা। এছাড়া সরকার সমর্থিত সদস্যদের বিরুদ্ধে পারস্পরিক যোগসাজশে বিসিএস ভাইভা বোর্ডে দলীয় অনুগতদের কিংবা লেনদেনের বিনিময়ে বেশি নম্বর দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর এসব কারণে চেয়ারম্যান সা’দত হোসাইন তাদের জন্য কাঁটা হয়ে দাঁড়ান। তাকে সরিয়ে দিতে একাধিকবার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১০ সালের এপ্রিল মাসে চেয়ারম্যানকে সরিয়ে দিতে এ টি আহমেদুল হক চৌধুরী রাষ্ট্রপতির কাছে ‘কর্ম কমিশনে স্থবিরতা’ শীর্ষক চিঠি দিয়েছিলেন।
এছাড়া কমিশনের সচিব চৌধুরী মো. বাবুল হাসান একটি প্রভাব বলয় তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কমিশন একটি স্বতন্ত্র সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্ত্বেও তিনি সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে উঠেপড়ে লেগেছেন। কমিশনের মান উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তাতে বাধা সৃষ্টি করছেন তিনি।
সরকার সমর্থকদের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে একটি বাস্তব কেস স্টাডি হয়। সূত্র জানায়, সম্প্রতি ৩০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফলে ২ হাজার ৩৬৭ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে জেনারেল ক্যাডারে এক প্রার্থী খাদ্য ক্যাডার পেয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্র জানায়, ওই প্রার্থী লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে ৬৮৫ নম্বর অবস্থানে ছিলেন। এ টি আহমেদুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত ভাইভা বোর্ডে তাকে ২০০ নম্বরের মধ্যে ১৭৮ নম্বর দেয়া হয়। এত বেশি নম্বর দেয়ায় ওই প্রার্থী মেধাতালিকায় এগিয়ে গিয়ে খাদ্য ক্যাডার পেয়েছেন। অন্যদিকে ভিন্নমতের প্রার্থী অনুমান করতে পারলে তাদের নম্বর কমিয়ে দেয়া এবং মানসিক হেনস্তার অভিযোগ ওঠে। এছাড়া সম্প্রতি প্রশ্নপত্র এবং খাতা মূল্যায়নের মান উন্নত করতে কমিশন চেয়ারম্যান উদ্যোগ নিলেও তা নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। সূত্র জানায়, সদস্য মোহাম্মদ হোসেন সেরনিয়াবাত এর বিরোধিতা করে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করছেন।
নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগ নিয়ে দৌড়ঝাঁপ : কে হচ্ছেন পিএসসির নতুন চেয়ারম্যান, তা এখনও স্পষ্ট না হলেও সরকারের পছন্দের ব্যক্তি যে ওই পদে আসছেন তাতে সন্দেহ নেই। গুঞ্জন রয়েছে, সদ্যবিদায়ী কেবিনেট সচিব আবদুল আজিজকে পিএসসি চেয়ারম্যান করা হতে পারে। দৌড়ে পিছিয়ে থাকলেও পিএসসি’র সদস্য মোহাম্মদ সেরনিয়াবাত ওই পদে বসতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশীদ, ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ঢাবি সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের নামও শোনা যাচ্ছে।
নামেমাত্র সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান : ১৯৭২ সালে গঠিত পিএসসি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। সংবিধানের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে কর্ম কমিশনের কথা বলা হয়েছে। ১৩৭ থেকে ১৪০ অনুচ্ছেদে পিএসসি’র গঠন, চেয়ারম্যান ও সদস্য নিয়োগ, পদের মেয়াদ এবং কমিশনের দায়িত্ব বর্ণিত আছে। ১৩৮(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘প্রত্যেক সরকারি কর্ম কমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নিযুক্ত হইবেন।’ ১৩৮(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়, ‘সংসদ কর্তৃক প্রণীত যে কোন আইন-সাপেক্ষে কোন সরকারি কর্মকমিশনের সভাপতি ও অন্যান্য সদস্যের কর্মের শর্তাবলী রাষ্ট্রপতির আদেশের দ্বারা যেরূপ নির্ধারণ করিবেন, সেইরূপ হইবে। এছাড়া ১৩৯ (১), (২), (৩) ও (৪) অনুচ্ছেদে কর্মকমিশনের সভাপতি বা অন্য কোন সদস্য তাহার দায়িত্ব গ্রহণের বয়স, মেয়াদ, অপসারণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। ১৪০(১) অনুচ্ছেদে কমিশনের দায়িত্ব সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘১৪৭ অনুচ্ছেদে কমিশনের সভাপতি ও সদস্যদের পারিশ্রমিক, বিশেষ অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্তের এমন কোন তারতম্য করা যাবে না যা তাদের পক্ষে অসুবিধাজনক হতে পারে। ১৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তারা শপথ গ্রহণের মাধ্যমে দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হন। এছাড়া হাইকোর্টের রুলিং অনুযায়ী এসব ব্যক্তির কোন নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ নেই।’
সংবিধান এই কমিশনকে স্বতন্ত্র সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা দিলেও বাস্তবে মর্যাদা অনেক নিচে। কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগে সততা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও যোগ্যতার মাপকাঠি কী হবে, সে সম্পর্কে সংবিধানে কিছুই বলা হয়নি। সংবিধানে সভাপতি ও সদস্যদের পারিশ্রমিক, বিশেষ অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্তের এমন কোনো তারতম্য করা যাবে না—বলা হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। মর্যাদার দিক থেকে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশন, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে (বিমক) পিএসসি’র চেয়ে উচ্চমর্যাদা দেয়া হয়েছে।
কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত করেন—সংবিধানে এমন কথা বলা হলেও বাস্তবে প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রণালয়ের পরামর্শেই নিয়োগ হয়ে থাকে। কমিশনের সদস্য নিয়োগে কোনো নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ নেই বলা হলেও বাস্তবে তার মিল নেই। সরকারের নির্বাহী বিভাগের মন্ত্রী, এমপি, উপদেষ্টা, সচিব কিংবা দলীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরাই নিয়োগে প্রভাব বিস্তার ও নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
এসব বিষয়ে ড. আকবর আলি খান আমার দেশ-কে বলেন, কমিশনের সদস্যদের নিয়োগের যোগ্যতা, দক্ষতা, নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতার কোনো মাপকাঠি সংবিধানে নেই। সংবিধানের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদের ১৩৭, ১৩৮ এবং ১৩৯ অনুচ্ছেদে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ এবং বয়সের কথা বলা হলেও নিয়োগ মাপকাঠির বিস্তারিত কিছু নেই। কমিশন প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত কোনো সরকারই তা করেনি। অথচ ইচ্ছা করলেই সরকারের পক্ষে এটা করা সম্ভব এবং এতে প্রতিষ্ঠানটির সুনাম ও মর্যাদাও প্রতিষ্ঠা হবে।
চেয়ারম্যানের বক্তব্য : পিএসসি’র চেয়ারম্যান ড. সা’দত হোসাইন বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হলেও বাস্তবে এটি একটি ন্যারো-বেজড লো-প্রফাইলের প্রতিষ্ঠান। আমাদের চেয়ে অন্য অনেক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা বেশি। এখানে নিয়োগের কোনো মাপকাঠি না থাকায় রাস্তা থেকে একজনকে ধরে নিয়ে বসালেও তা আইনবহির্ভূত হয় না। তিনি বলেন, আমাদের সদস্যরা নতুন স্কেলে বেতন পর্যন্ত পাচ্ছেন না।
পিএসসিতে দলীয় সদস্য নিয়োগ সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি আমার এখতিয়ারবহির্ভূত। পিএসসি কোনো সদস্যকে নিয়োগ দেয় না। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।

ক্ষমতাসীনদের কোন্দলে বাড়ছে খুন



নাছির উদ্দিন শোয়েব
চাঞ্চল্যকর খুনের আসামিকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে না। ঘুরে বেড়াচ্ছে পুলিশের নাকের ডগায়। এমনকি উল্টো বাদীপক্ষকেও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বাড়িঘরে হামলাও চালানো হচ্ছে। বাদী ও ভুক্তভোগীরা মামলা করেও পড়ছেন বিপাকে। মামলার এজাহারভুক্ত আসামি হলেও এসব আসামিকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না? পুলিশ নাগালে পেয়েও কেন ধরছে না? এসব প্রশ্নের জবাবে পুলিশেরই ঊর্ধ্বতন কেউ কেউ বলছেন, যারা আসামি তারা অত্যন্ত ক্ষমতাশালী। দলের লোক খুন হলেও একই দলের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় চিহ্নিত আসামিদের গ্রেফতার করা যাচ্ছে না। এক্ষেত্রে পুলিশ অনেকটা নিরুপায় বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক কর্মকর্তা।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১১ দিনেও গ্রেফতার হয়নি নরসিংদীর জনপ্রিয় মেয়র লোকমান হোসেন হত্যার আসামিরা। এ ঘটনায় ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজুর ভাইসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ কয়েকজনকে আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন লোকমানের ভাই। কিন্তু আসামিরা গ্রেফতার তো হয়ইনি; বরং লোকমানের বাড়িতে পুলিশের উপস্থিতিতেই হামলা ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। পরিবারটি এখন চরম নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে। কিন্তু এ ঘটনায় কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে তাত্ক্ষণিকভাবে গ্রেফতার করে পুলিশ। অথচ বাদীপক্ষ মামলার এজাহারেও তার নাম উল্লেখ করেনি। এমনকি হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে খোকনের জড়িত থাকার ব্যাপারে কোনো মৌখিক অভিযোগও করা হয়নি। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই তাকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের জন্য আবেদন করে আদালতে। আদালত তাকে জামিন দিলেও ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করা পুলিশ অন্য একটি মামলায় তাকে আটক দেখিয়ে হয়রানি করছে বলে খোকনের পরিবার অভিযোগ করেছে। প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার না করে ভিন্নমতের নেতাদের হয়রানি করে খুনিদের উত্সাহ বাড়িয়ে দিয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। অত্যুত্সাহে হত্যাকারী চক্র লোকমানের বাড়িতে হামলা-বোমাবাজি করছে মহানন্দে। অভিযোগ আছে, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে দলীয় লোক খুন হলেও পুলিশ এসব হত্যা মামলা আগ্রহ নিয়ে তদন্ত করছে না। আসামিরা দলীয় লোক হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে না। খুন করেও পার পেয়ে যাচ্ছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৩১ অক্টোবর রাতে নরসিংদীর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে জনপ্রিয় পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে। সন্ধ্যার পরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বসে মিটিং করার সময় সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে লোকমান হোসেনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে তিনি মারা যান।
মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ৩৪ মাসে অভ্যন্তরীণ কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৯৪ জন নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও প্রায় ১৫ হাজার নেতাকর্মী। অনুসন্ধানে দেখা গেছে আধিপত্য বিস্তার, টেন্ডারবাজি, ভাগ-বাটোয়ারা ও ক্ষমতার দ্বন্দ্বের জেরে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসব হত্যাকাণ্ডের কোনোটিরই কিনারা হয়নি। বেশিরভাগ আসামিই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের লোক। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গা বাঁচিয়ে চলছে। আলোচিত হত্যা মামলা হলেও এ ধরনের বহু মামলার তদন্ত ঝুলে আছে। দু-একটি ছাড়া বেশিরভাগ মামলার বাদীপক্ষও সোচ্চার না থাকায় মামলাগুলো হিমাগারে পড়ে আছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন প্রায় সময়ই বলে থাকেন, ‘সন্ত্রাসী সে যে দলেরই হোক, তাকে ছাড় দেয়া হবে না’, কিন্তু নিজের দলের লোকের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে। এমনকি লোকমান হোসেন হত্যার পরও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার করা হবে। মন্ত্রীর আস্ফাালন কোনো কাজে আসছে না। জিডিতে তার ‘নির্দেশনা’র হম্বিতম্বি ফলাও করে দেখানো হলেও কেউ তা মানছে না।
অধিকারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে গত অক্টোবর পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর অভ্যন্তরীণ কোন্দলে কমপক্ষে ৯৪ জন নিহত হয়েছে, আহত কমপক্ষে ১৫ হাজার। কোন্দলে গত বছর মারা গেছেন ৫২ জন, আহত হয়েছেন ৮ হাজার ৫০০ জন। এর আগের বছর কোন্দলে আওয়ামী লীগের ৩৮ জন খুন হয়েছেন। চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ সংঘাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। আহত হয়েছেন তিন হাজার ২০৮ জন।
তবে থেমে নেই ক্ষমতাসীনদের অভ্যন্তরীণ সংঘাত-সংঘর্ষ। চলতি মাসেই নিহত হলেন দুই জনপ্রতিনিধি। এ হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে। ভাংচুর করা হয়েছে যানবাহন এবং মানুষের ঘরবড়ি। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, এলাকার নিয়ন্ত্রণ, আধিপত্য বিস্তার, স্থানীয় নির্বাচন, ব্যক্তিগত ও দলীয় রেষারেষির কারণে এসব খুনের ঘটনা ঘটে।
গত ১৪ জানুয়ারি আগারগাঁওয়ে ৪১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক খুন হন। এ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন একই ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি নূর মোহাম্মদ। তিনি গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেছিলেন, অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হয়েছেন ফজলুল হক। নূর মোহাম্মদকে গুলি করার ঘটনায় ফজলুল হক গ্রুপের হাত রয়েছে মনে করে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চরমে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে গিয়েই ফজলুকে হত্যা করা হয়।
গত বছর ৭ অক্টোবর রাজধানীর মগবাজারে টেন্ডার বিরোধে ছাত্রলীগ ক্যাডারদের হামলায় খুন হয় যুবলীগ নেতা ইউসুফ আলী সরদার। এর আগে সংসদ ভবন এলাকায় ভোলা-৩ আসনের এমপি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের পিস্তলের গুলিতে খুন হন যুবলীগ নেতা ইব্রাহীম আহমেদ। এ ঘটনার এখন পর্যন্ত কোনো কিনারা হয়নি। এ মামলায়, মাজহারুল ইসলাম মিঠু, গোলাম মোস্তফা শিমুল ও শাওনের গানম্যান দেলোয়ার হোসেন ও গাড়িচালক কামাল হোসেন কালাকে গ্রেফতার করা হলেও একজন ছাড়া বাকি আসামিরা বর্তমানে জামিনে মুক্ত।
গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে ক্যান্টনমেন্ট থানা ছাত্রলীগের সভাপতি এবিএম ফারুক হোসেন খুন হন। আত্মীয়স্বজনরা অভিযোগ করেন, ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের একটি গ্রুপ ফারুককে গুলি করেছে। এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু এ হত্যা মামলায় দলীয় কোনো ক্যাডার গ্রেফতার হয়নি। একই বছরের ২৬ জুলাই চাঁদাবাজিকে কেন্দ্র করে রাজধানীর কাফরুলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব ও তার দলবল ১৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের নেতা গিয়াস উদ্দিন গেসুকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ মাহবুবকে গ্রেফতার করেছিল। পরে সে জামিনে বেরিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে, চাঁদাবাজির ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে গেসুকে খুন করা হয়েছিল। মোহাম্মদপুর এলাকায় ক্যাবল ব্যবসার নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পিটিয়ে হত্যা করা হয় থানা ছাত্র লীগের সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন ওরফে কুতু বাবুকে। মোহাম্মদপুরের মাদক ব্যবসা, ডিশ লাইনের ব্যবসা, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের জের ধরে ক্ষমতাসীন দলের প্রতিপক্ষের ক্যাডাররা কুতুকে হত্যা করেছিল বলে ওই সময় কুতুর স্বজনরা অভিযোগ করেন। এছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফজলে রাব্বি হলে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে আবুল কালাম আসাদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা নিহত হয়। নিহত আসাদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের একাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই সংঘর্ষে আহত হয়েছিল প্রায় ৫০ জন। এ ঘটনায়ও প্রকৃত খুনি গ্রেফতার হয়নি।