Sunday 28 March 2010

আতাউস সামাদের প্রতিবাদ : আমার সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফের বক্তব্য সঠিক নয়

স্টাফ রিপোর্টার
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গত শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে দলের আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দেশের প্রখ্যাত সাংবাদিক আতাউস সামাদের একটি লেখা নিয়ে যে মন্তব্য করেছেন গতকাল এক বিবৃতিতে আতাউস সামাদ তার উত্তর দিয়েছেন। সৈয়দ আশরাফের বক্তব্য সঠিক নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, কোনো দল বা কোনো গোষ্ঠীর সমর্থনের কথা চিন্তা করে তিনি বা তার মতো কোনো পেশাদার সাংবাদিক লেখেন না। দেশের মানুষ এই মুহূর্তে কী ভাবছেন, কী চাইছেন, কেমন আছেন এ বাস্তবতার আলোকেই তারা লিখে থাকেন।
গতকাল ওই বিবৃতিতে আতাউস সামাদ বলেন, আমার একটি লেখা সম্পর্কে আজ (২৮ মার্চ, রোববার) আমার দেশ পত্রিকায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাহেবের কিছু মন্তব্য পড়লাম। তার মন্তব্যগুলো সঠিক নয়। যেমন—তিনি আমাকে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত সাংবাদিক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। আমার লেখা কোন দল বা কোন গোষ্ঠী সমর্থন করবে, তা চিন্তা করে কিন্তু আমি লিখি না। কোনো পেশাদার সাংবাদিকই তা করেন না। দেশের মানুষ এই মুহূর্তে কী ভাবছেন, কী চাইছেন, কেমন আছেন বাস্তবতার আলোকে আমরা তাই লিখি। দ্বিতীয়ত আমি এখন যে চারটি বাংলা দৈনিক পত্রিকায় নিয়মিত লিখছি সেগুলোর সম্পাদকদের তিনজনেরই বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। বস্তুতপক্ষে তাদের একজন মহাজোটের অংশীদার জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দু’জনের সুসম্পর্ক বিদ্যমান। বাকি একজনের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আছে। তবে তিনি এ দলের কোনো পদে নেই। আমি সৌভাগ্যবান যে, দেশের প্রায় সব পত্রিকার সম্পাদকই আমার লেখাকে ছাপানোর যোগ্য মনে করেন। যেমন—বিএনপি’র ঘোর সমালোচক এবং আওয়ামী লীগের নিখাদ সমর্থক দৈনিক জনকণ্ঠ পত্রিকার সম্পাদক তাদের স্বাধীনতা দিবস সংখ্যায় আমার লেখা প্রকাশ করেছেন। তৃতীয়ত আমার যে লেখাটি সম্পর্কে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম মন্তব্য করেছেন তা গত শনিবার কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে ‘তবু একাত্তরের অপরাধীদের বিচার হোক’ এই শিরোনামে। আমি বরাবরই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছি এবং ১৯৯২তে এ বিষয়ে আমি শহীদ জননী মিসেস জাহানারা ইমামকে সহযোগিতাও করেছি। সে সময় বিশিষ্ট আইনজীবী ড. কামাল হোসেন আমাকে ‘আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন ১৯৯৩’ বুঝিয়ে দিলে আমি তার (ড. কামাল হোসেন) কাছ থেকে ওই আইনের কপি চেয়ে নিয়ে মিসেস ইমামকে পৌঁছে দিই। কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত আমার আলোচ্য লেখায়ও আমি যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সমর্থন করেছি এবং এর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগবে বলে আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ যে মন্তব্য করেছেন, আমি আমার বিশ্লেষণ দিয়ে তা সমর্থন করেছি। লেখাটির একেবারে শেষ প্যারাগ্রাফে আমি দেশের বিরাজমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করে তার প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেছি, ‘এর সমাধান আশু প্রয়োজন’। কিন্তু আমি এই কর্তব্য পালনকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পূর্বশর্ত হিসেবে কোথাও উল্লেখ করিনি, এমন কী ইঙ্গিতও করিনি। আমার মনে হয়, মাননীয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম আমার আলোচ্য লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়েননি। ফলে তিনি নিজেও ভুল করেছেন এবং তার শ্রোতাদেরকে বিভ্রান্ত করেছেন।
তবে আমি আজকে এই সুযোগে বলব যে, একটা সরকারের অনেক ভালো কাজ ম্লান হয়ে যেতে পারে একটিমাত্র ব্যর্থতা বা ভুলের জন্য। সেদিক থেকে বর্তমান সরকার নিজের মঙ্গল করবেন যদি পক্ষপাতহীনভাবে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির লাগাম টেনে ধরেন।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/29/24897

No comments:

Post a Comment