Thursday 25 March 2010

মন্ত্রিসভায় স্বাধীনতাবিরোধী রয়েছে : ’৭৫-এ ব্যর্থতার জন্য কয়েকজনকে ফাঁসি দেয়া উচিত : কাদের সিদ্দিকী

স্টাফ রিপোর্টার
বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় স্বাধীনতাবিরোধী রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বাধীনতার অন্যতম সংগঠক বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কার্যক্রমের ব্যাপারে তিনি বলেন, তাদের কারণেই গোলাম আযম এদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম গঠন করে তারা গত নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়েছেন, মন্ত্রীও হয়েছেন। এ ফোরামের শীর্ষ কয়েকজনকে ৭৫-এর ব্যর্থতার জন্য ফাঁসি দেয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি। এছাড়া বিচারের আগে কাউকেই যুদ্ধাপরাধী বলা উচিত নয় বলেও মনে করেন তিনি। এমনকি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের সহযোগীদেরও নয়।
গতকাল দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মাসিক সহজ কথা আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সহজ কথা সম্পাদক আমিরুল মোমেনীন মানিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। নির্বাহী সম্পাদক নয়ন মুরাদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও বর্তমান প্রেক্ষাপটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সহ-সভাপতি আজমল হক হেলাল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার খোকা এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক পথিক সাহা।
এ সময় তিনি চলতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্তদের ব্যাপারে ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন, সুযোগ থাকার পরেও স্বাধীনতাযুদ্ধে অংশ নেয়নি তাদের আজ স্বাধীনতা পদক দেয়া হচ্ছে। স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় লন্ডনে কোনো একটি সংগঠনে কিছু চাঁদা দিয়েছে এমন ব্যক্তিরা আজ চাঁদার রসিদ দেখিয়ে স্বাধীনতা পদক নিচ্ছে।
যুদ্ধাপরাধী প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে থাকলেই তাকে যুদ্ধাপরাধী বলা যাবে না। রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিয়ে যুদ্ধাপরাধী চিহ্নিত করতে হবে। রেডিও কিংবা টেলিভিশনে যুদ্ধাপরাধীদের নাম চাওয়াটাও সঠিক মনে করেন না তিনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন আর সেই অবস্থা নেই। তবে এখনও মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক নেতা জীবিত রয়েছেন, বিচার শুরুর আগে তাদের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করা উচিত।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, বড় দুই দলেই স্বাধীনতাবিরোধী রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাফর উল্লাহ, সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলিমের নাম উল্লেখ করেন। সরকার তাদের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করবেন কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন তিনি। তবে তিনি উপযাচক হিসেবে কিছু করতে চান না।
যুদ্ধাপরাধের বিচার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিচার অবশ্যই আন্তর্জাতিক মানের হওয়া উচিত। প্রয়োজনে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে দেখতে হবে। পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নিয়েই এ বিচার কাজ শুরু করা উচিত। প্রয়োজনে আরও সময় নেয়ার পক্ষেও মত দেন তিনি। কেননা, বিচার শুরু হওয়ার পরপরই পাকিস্তানের মিত্রদেশগুলো থেকে অপরাধীদের বাঁচাতে প্রচেষ্টা চালানো হবে। একইসঙ্গে তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে যাতে কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি এ অভিযোগে অভিযুক্ত না হন সেদিকে লক্ষ্য রাখার আহ্বান জানান তিনি।

http://www.amardeshonline.com/pages/details/2010/03/26/24491

No comments:

Post a Comment