Wednesday 14 July 2010

পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু রমনার ওসিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আদালত প্রতিবেদক
রাজধানীর মগবাজারের সিএনজি অটোরিকশা ব্যবসায়ী বাবুল গাজীকে হত্যার অভিযোগে রমনা থানার ওসি শিবলী নোমানসহ পাঁচ পুলিশ সদস্য ও পুলিশের দুই সোর্সের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় মারা যাওয়া বাবুল গাজীর স্ত্রী নাছিমা আক্তার শুভ গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে এ মামলা করেন।
মহানগর হাকিম মেহেদী হাসান তালুকদার বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। আগামী ১৬ আগস্ট সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন রমনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আলতাফ হোসেন, কনস্টেবল সিরাজ, হিরন ও নান্নু এবং পুলিশের সোর্স আনিসুর রহমান ও শাহাদত।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৮ জুন রাতে বাবুল গাজীকে মগবাজার টিঅ্যান্ডটি কলোনির একটি চায়ের দোকান থেকে তুলে নিয়ে যায় রমনা থানার পুলিশ। এরপর মগবাজার টিঅ্যান্ডটি কলোনি আনসার ক্যাম্পে নিয়ে তাঁকে নির্যাতন চালানো হয়। সেখানে এসআই আলতাফ হোসেন বাবুল গাজীকে বলেন, 'তোর একটি সিএনজি অটোরিকশা আমরা আটক করেছি দুজন ড্রাইভারসহ। চুরির মামলা দিয়েছি তোর ড্রাইভারদের বিরুদ্ধে।' আলতাফ তখন অটোরিকশাটি ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য বাবুল গাজীর কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। রাজি না হলে আলতাফ বলেন, 'সিএনজি তো পাবিই না, দুজন চালককেও ফেরত পাবি না। চালক মমিন ও করিমের সঙ্গে তোকেও ওই
মামলায় ঢুকিয়ে দেব।' পরে বাধ্য হয়ে বাদী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েক ভাগে ৭০ হাজার টাকা দেন। অভিযোগে আরো বলা হয়, এসআই আলতাফ এবং কনস্টেবল সিরাজ, হিরণ ও নান্নু তাঁকে (বাবুল) লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও বুট দিয়ে লাথি মেরে নির্যাতন চালায়। ওই দিন রাত ১২টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে স্বামীর লাশ দেখতে পান বাদী।
বাদী অভিযোগ করেন, পুলিশের নির্যাতনের ফলে তাঁর স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। এক লাখ ৩০ হাজার টাকা ঘুষ না পেয়ে রমনা থানার ওসি ও তাঁর সহকারীরা বাবুল গাজীকে পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেন।
মামলায় বাদী আরো অভিযোগ করেন, তাঁর স্বামী নিহত হওয়ার পর তাঁকে থানায় নিয়ে সাদা স্টাম্পে সই নেওয়ার চেষ্টা করেন এসআই আলতাফ হোসেন। তিনি বাদীকে দুই লাখ টাকাও দিতে চান বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। বাদী বলেন, স্টাম্পে সই না করলে তাঁর স্বামীর লাশ দিতে চায়নি পুলিশ। পরের দিন সন্ধ্যায় বাদীর অভিভাবকরা বাবুল গাজীর লাশ নিয়ে আসেন। তখন লাশের কপালের বাঁ পাশে ও চোখের পাতার ওপর গর্ত এবং চোখের নিচ, হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম দেখতে পান। বাদী মামলায় আরো বলেন, তাঁর স্বামী নিহত হওয়ার পর রমনা থানায় মামলা করতে গেলে ওসিসহ অন্য পুলিশ সদস্যরা থানায় মামলা নেননি। বাদী স্বামী হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
বাদীর আইনজীবী রুহুল আমিন তুহিন কালের কণ্ঠকে বলেন, বিশ্ব মানবাধিকার ও ক্রাইম রিপোর্টার্স সোসাইটি বাদীকে আইনি লড়াইয়ে সহযোগিতা করছে।

http://www.kalerkantho.com/ ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ আষাঢ় ১৪১৭, ২ শাবান ১৪৩১, ১৫ জুলাই ২০১০

No comments:

Post a Comment